টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে ১৮ ইউনিয়নের তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার ১৬৫ ছোট-বড় চর প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। পানির প্রবল স্রোতে নদ-নদীর তীরে দেখা দিয়েছে ব্যাপক ভাঙন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গেল ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ২৭ সেন্টিমিটার বেড়ে গাইবান্ধার ফুলছড়ি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি ৫০ সেন্টিমিটার বেড়ে গাইবান্ধা শহর পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এছাড়া তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে এসব চরের মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্র বা নিরাপদ উঁচু স্থানে সরিয়ে নেয়া হবে।
এদিকে পানি বৃদ্ধির ফলে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনা নদীবেষ্টিত সুন্দরগঞ্জের তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, কাপাসিয়া, শ্রীপুর, সদর উপজেলার মোল্লারচর, কামারজানী, ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া, উদাখালী, এরেন্ডাবাড়ী, ফজলুপুর, গজারিয়া, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী, সাঘাটা, হলদিয়া, জুমারবাড়ী ইউনিয়নের ১৬৫টি চর প্লাবিত হয়েছে। এসব চরের ৭০ ভাগ বাড়িঘরে পানি উঠায় গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মানুষগুলো।
অপরদিকে নদ-নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধির ফলে নদী তীরের চরাঞ্চল ও মূলভূখণ্ডে দেখা দিয়েছে ভাঙন। সুন্দরগঞ্জের চন্ডিপুরের হরিপুরঘাট, কাপাসিয়ার লালচামার, সদরে কামারজানীর গোঘাট, রায়দাসবাড়ী, ফুলছড়ির এরেন্ডাবাড়ীর জিগাবাড়ী, উড়িয়ার রতনপুর, উদাখালীর সিংড়িয়া, গজারিয়ার কাতলামারী, সাঘাটার ভরতখালীর হাটভরতখালী, হলদিয়া ও জুমারবাড়ীর নলছিয়া এলাকাসহ চরাঞ্চলগুলোতে দেখা দিয়েছে ব্যাপক নদী ভাঙন।
প্রতিদিনই নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে শতশত ঘরবাড়ি, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গাছ-পালাসহ ফসলি জমি। নদী ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো আশ্রয় নিচ্ছে অন্যের জায়গা, আত্মীয়ের বাড়ি ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে। ভিটেমাটি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।